জেলা গোয়েন্দা শাখার বিশেষ অভিযানে ভন্ড জ্বিনের বাদশা পরিচয়ে ও অলৌকিক ক্ষমতার ভান করে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে সাধারণ বিভিন্ন নারী ও পুরুষের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়া চক্রের মূল হোতা ভন্ড জ্বিনের বাদশা মহিদুল ইসলামকে গ্রেফতার করে জেলা গোয়েন্দা শাখা। প্রতারণা কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন আলামত উদ্ধার।
গত (৪ নভেম্বর) মামলার বাদী বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ওয়ারেন্ট অফিসার (অবঃ) মোঃ মোমিনুর রহমান (৬৫), পিতা মৃত সাখাওয়াত হোসেন, সাং ফুলতলা, শাহজাহানপুর বগুড়া। মোমিনুর রহমান বাদী হয়ে, মহিদুল ইসলামসহ ৪ জনকে বিবাদী করে, সোনাতলা থানায় মামলা দায়ের করে।
উক্ত মামলার গ্রেফতারকৃত আসামী হলো সোনাতলা উপজেলার রানিরপাড়া গ্রামের তোজাম আকন্দের ছেলে মাহিদুল ইসলাম (৩৫), ভন্ড প্রতারক জীনের বাদশা (কবিরাজ)। উক্ত মামলার ঘটনার কিছুদিন পুর্বে ১নং বিবাদীর সাথে বাদীর মহাস্থান এলাকায় ইসলামী জলসায় পরিচয় হয়। সেই সুবাদে বাদীর সাথে ১নং বিবাদীর মাঝে মধ্যে কথা বার্তা হতো। বাদী প্রতিদিনের ন্যায় গত ০৭/০৯/২০২৫ ইং তারিখ আছরের নামাজ পড়ার উদ্দেশ্যে বাড়ী থেকে বাহির হয়। অনুমানিক রাত ১০ টার সময় বাদীর মেয়ে ফাতেমা জানায় যে, ১নং বিবাদীর বাড়ীতে ইসলামিক জালসা আছে, সেখানে বাদীকে যেতে বললে বাদী আরো ৬ জন গত ০৭/০৯/২৫ ইং তারিখে সেখানে যায়। পরের দিন বিবাদীগণ আমাকে খাবারের সাথে মেডিসিন-ক্যামিকাল অথবা ঝাঁড়ফুক দিয়ে অস্বাভাবিক অবস্থায় রাখে যাহাতে বাদী কোন ধরনের যথাযথ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে না পারেন। বাদীর আত্মীয় স্বজন সবাই বাদীকে ফোন করলে আজ আসবো, কাল আসবো বলিয়া প্রায় ৭ দিন অতিবাহিত করেন। পরবর্তীতে এই ৭ দিন সহ বিভিন্ন সময়ে বিবাদীগণ বাদীর নিকট হতে নগদে ও বিকাশের মাধ্যমে মোট ১২ লক্ষ টাকা প্রতারণার মাধ্যমে বিবাদীগণ হাতিয়ে নেয়। উক্ত মামলার প্রেক্ষিতে সোনাতলা থানার মামলা নং-০২ তাং-০৪/১২/২৫ খ্রিঃ ধারা-৪২০/৩৮৬/৩৪/৫০৬ পেনাল কোড রুজু হয়।
উক্ত মামলা রুজুর পর জেলা গোয়েন্দা শাখা বগুড়ার অফিসার এসআই নিরস্ত্র মোঃ আরিফুল ইসলাম-২ এর নেতৃত্বে একটি চৌকশ টিম বিবাদী মহিদুল ইসলাম এর বসতবাড়িতে অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেফতার করেন এবং তার নিকট হতে ০২টি কথিত হাড়, ০২ সুরমা দানী,০৩ লাল কাপুর, ০১টি আতর, ০২টি তাবিজ, ০৩টুকরা সাদা কাপুর, ০৩টি তজমি ছোট বড়, ০৫টি আগর বাতি ও কালো সুতা উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বিবাদী স্বীকার করে যে, তিনি বিভিন্ন সাধারণ মানুষকে কবিরাজী চিকিৎসা প্রদানসহ অলৌকিক ক্ষমতা প্রয়োগের প্রলোভন দেখিয়ে সাধারন মানুষের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিত।
গ্রেফতার আসামী মহিদুল ইসলামকে আজ বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়।